এমদাদুল ছবি আঁকেন মুখ দিয়ে !

এমদাদুল ছবি আঁকেন মুখ দিয়ে !

দুই হাত নেই, পা দুটোও অচল। হুইলচেয়ারের সঙ্গে বিশেষ কায়দায় লাগানো ক্যানভাসে মুখ দিয়ে তুলি ধরে ছবি আঁকেন এমদাদুল। আর এভাবে ছবি বিক্রি করেই চলছে সংসার।    

 

এমদাদুলের বাড়ি নওগাঁর মান্দা উপজেলার বালুবাজার গ্রামে। ২০০৫ সালে দিনাজপুরে পল্লী বিদ্যুতের লাইনম্যান হিসেবে কাজ করার সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়েন তিনি। দুর্ঘটনার পর দিনাজপুর সদর হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও সাভারের সিআরপিতে চিকিৎসা নেন আট বছর। কিন্তু চিকিৎসায় পুরোপুরি সুস্থ হতে পারেননি তিনি। শরীর থেকে কেটে ফেলতে হয় দুই হাত। পা দুটি কাটা না লাগলেও হয়ে যায় অচল। এরপরও হাল ছাড়েননি এমদাদুল। হুইলচেয়ারের সঙ্গে বিশেষ কায়দায় লাগানো ক্যানভাসে এঁকে চলেছেন নানা ছবি।

 

 

এমদাদুল জানান, তিনি এসএসসি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। স্কুলে পড়ার সময় তাঁর ছবি আঁকার খুব শখ ছিল। পল্লী বিদ্যুতে চাকরি পাওয়ার পর আর ছবি আঁকা হতো না। দুর্ঘটনার পর সিআরপিতে থাকা অবস্থায় সবার কাছে শুনেছেন, লাভলী নামের একজন মুখ দিয়ে ছবি আঁকেন। লাভলীর গল্প শুনে তিনি অনুপ্রাণিত হন। চিকিৎসার পর কিছুটা সুস্থ হলে ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জড ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (পিডিএফ) নামের একটি সংগঠনের সহযোগিতায় শুরু করেন মুখ দিয়ে ছবি আঁকা। ওই সংগঠনের উদ্যোগে বনানীর লীলা গ্যালারিতে ২০১৬ সালে তাঁর আঁকা ছবির একক প্রদর্শনী হয়েছে।

 

এমদাদুল বলেন, ‘প্রথম দিকে ছবি আঁকতে সমস্যা হতো। তবে এখন আর সমস্যা হয় না। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ছবি আঁকতে পারি। এ পর্যন্ত দুই হাজার ছবি এঁকেছি। ঢাকায় থাকা অবস্থায় যেসব এঁকেছি, এর প্রায় সব বিক্রি হয়ে গেছে। ঢাকার লোকজন ছবির কদর ভালো বুঝত। কিন্তু গ্রামের বাড়িতে আসার পর আঁকা ছবি তেমন বিক্রি হচ্ছে না। গ্রামের লোকজন ছবি বা শিল্পীর কদর বোঝে না।’

 

 

এমদাদুল আরও বলেন, নিজ বাড়িতে থেকে আঁকা ছবি বিক্রি করা তাঁর পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়েছে। সুযোগ পেলে ঢাকা কিংবা বড় কোনো শহরে নিজের আঁকা ছবির প্রদর্শনী করে, ছবি বিক্রি করে নিজের চিকিৎসার খরচ ও সংসারের সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে চান।

 

 

 

 

 

 

 

সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো