ভিআর জগতে পেইন্টিংও !

ভিআর জগতে পেইন্টিংও !

আর্ট ক্লাসে আসা নতুন শিক্ষার্থীদের হয়তো কিছুদিনের মধ্যেই শেখানো হবে—পেইন্ট করতে হয় জয়স্টিক দিয়ে আর দেখতে হয় ভিআর হেডসেট দিয়ে। শিল্পী মানসের এই একান্ত পৃথিবীতে কোলাহল নেই, ধুলা নেই, পেইন্টিং নষ্ট হওয়ার ভয় নেই, রং ব্যবহারের কোনো সীমা নেই, ক্যানভাসের নির্দিষ্ট আকার নেই। বলা যায়, পেইন্টিং বা চিত্রকর্ম সম্পর্কে মানুষের ধারণা আমূল বদলে দিতে যাচ্ছে ভার্চুয়াল রিয়ালিটি বা ভিআর পেইন্টিং।

সমসাময়িক শিল্পীরাও বিষয়টিতে যারপরনাই উচ্ছ্বসিত। এখানে ভিআর হেডসেটটি মাথায় পরার সঙ্গে সঙ্গেই হাজির হবে নতুন এক দুনিয়া। এটি শুধু আপনার। এটাকে আপনি ইচ্ছামতো রঙে সাজাবেন।

 

বিষয়টি কেমন-

বাস্তব জগতের বাইরের আরেক জগৎ ভার্চুয়াল রিয়ালিটি। অর্থাৎ এ ধরনের অ্যাপ চালু করলে আপনি ভার্চুয়াল রিয়ালিটিতে দেখতে পাবেন একটি এলাকা, যেখানে আপনি ছবি আঁকবেন। আশপাশে অনেক ম্যানু ভাসবে, যেগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে হবে হাতে থাকা জয়স্টিকের মাধ্যমে। একটি জয়স্টিক ব্রাশের কাজ করবে। আরেকটি জয়স্টিক থাকবে অন্যান্য বিষয় নিয়ন্ত্রণের জন্য।

 

ভার্চুয়াল পেইন্টিং জগৎ কেমন হবে ?

থ্রিডি ছবিতে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র জিনিসও শিল্পী নিজের মতো করে সংযোজন-বিয়োজন করতে পারে। এর কয়েক ধরনের ব্যবহার হতে পারে। ভার্চুয়াল পেইন্টিংয়ের মাধ্যমে থ্রিডি ছবি আঁকা যেতে পারে। এনিমেশনের মডেল তৈরি করা যেতে পারে। গেইম বা এনিমেটেড সিনেমার পরিবেশ তৈরি করা যেতে পারে। গড়ে তোলা যেতে পারে ভার্চুয়াল গ্যালারি।

 

রাশিয়ার ভার্চুয়াল স্টুডিও-

ভিআর পেইন্টিং প্রযুক্তির কার্যকর ব্যবহার বের করেছে রাশিয়া। তারা ভার্চুয়াল রিয়ালিটিকে কাজে লাগিয়ে আবার জীবন দিয়েছে বিগত শতাব্দীর বাঘা বাঘা শিল্পীর স্টুডিওকে। এখন নাতালিয়া গঞ্চারোভা আর কাজিমির মেলেভিচের স্টুডিও ঘুরে দেখতে পারছেন দর্শকরা। লন্ডনেও একই ধরনের একটি গ্যালারি গড়ে উঠেছে।

 

ভিআর পেইন্টিং অ্যাপ-

ভিআর পেইন্টিংয়ের অনেক অ্যাপই আছে। এগুলোর মধ্যে গুগল টিল্ট ব্রাশ (Google Tilt Brush), গ্র্যাভিটি স্কেচ (Gravity Sketch), আনবাউন্ড আলফা (Unbound Alpha), সাবস্ট্যান্স পেইন্টার (Substance Painter), ফেইসবুক কুইল (Facebook Quill), অকুলাস মিডিয়াম (Oculus Medium) ও মজিলা আ-পেইন্টার (Mozilla A-Painter) ব্যবহার হচ্ছে বেশি।

থ্রিডি শিল্পী জোয়ান ইয়োর মতে, ভিআর পেইন্টিংয়ের ভালো দিক হচ্ছে—এটি চিত্রশিল্প ও ভাস্কর্যশিল্পের এক মিশেল। পাথর বা কাদা দিয়ে কাজ করার কোনো বিষয় এখানে নেই। শুধু ভার্চুয়াল ব্রাশের কারসাজিতেই ফুটে উঠবে এসব আকার।

তাঁর মতো অনেকেই নতুন এই ধারাটিকে আত্তীকরণ করেছে। সামনের দিনগুলোতে প্যারালাল ওয়ার্ডের ধারণাটি হয়তো ভার্চুয়াল রিয়ালিটির হাত ধরে বাস্তবতা পাবে। যেখানে হেডসেটের বাইরে থাকবে এক পৃথিবী আর বাইরে আরেক।

 

 

সূত্রঃ দৈনিক কালের কন্ঠ

ছবিঃ সংগৃহীত