ফটোগ্রাফারকে বিখ্যাত করে দিলো ক্রোয়েশিয়ান ফুটবলার!

ফটোগ্রাফারকে বিখ্যাত করে দিলো ক্রোয়েশিয়ান ফুটবলার!

বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনাল রাতারাতি বিখ্যাত বানিয়ে দিয়েছে এএফপির আলোকচিত্রী ইউরি কর্টেজকে। কীভাবে ?


বার্তা সংস্থা এএফপির আলোকচিত্রী ইউরি কর্টেজ। এল সালভাদরের এই আলোকচিত্রীর পেশাগত অভিজ্ঞতা কম নয়। যুদ্ধ, মানবিক ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়, রাজনৈতিক ঘটনা—ক্যামেরা হাতে অনেক কিছুরই সাক্ষী তিনি। কিন্তু বিশ্বকাপ ফুটবল কভার করতে এসে একটি ঘটনাতেই তিনি পেয়ে গেছেন তারকাখ্যাতি। 

 

মানজুকিচের গোলের পর তাকে ঘিরে গোল উদযাপন করতে আসে পুরো দল। ছবি: এএফপি।

 

এল সালভাদরের হলেও কর্টেজ থাকেন মেক্সিকোয়। বিশ্বকাপে মেক্সিকোর খেলা কভার করাই ছিল তাঁর দায়িত্ব। কথা ছিল ৪ জুলাই পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে দেশে ফিরবেন। মেক্সিকো দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠায় তাঁর রাশিয়া থাকার সময়সীমা বাড়ানো হলো ১২ জুলাই পর্যন্ত। ১১ জুলাই ইংল্যান্ড-ক্রোয়েশিয়া ম্যাচেই যে এমন এক ঘটনার মুখোমুখি তিনি হবেন, সেটা কি তিনি ভেবেছিলেন?


ম্যাচের ১০৯ মিনিটের সময় মারিও মানজুকিচের গোলে ২-১ গোলে এগিয়ে গেল ক্রোয়েশিয়া। গোলের উদ্‌যাপনটা উদ্দামই হচ্ছিল ক্রোয়াট ফুটবলারদের। মাঠের খেলোয়াড়েরা তো বটেই, সাইড বেঞ্চের খেলোয়াড়েরাও ছুটে এসেছিলেন মানজুকিচের কাছে। উৎসবের মুহূর্তটির ছবি ক্যামেরাবন্দী করে রাখতে গিয়েই বিপদে পড়লেন কর্টেজ। ক্যামেরা নিয়ে পড়ে গেলেন ক্রোয়েশিয়ার খেলোয়াড়দের নিচে। মদরিচ, রাকিতিচ, মানজুকিচরা সংবিৎ ফিরে পেয়েই দেখলেন, একজন আলোকচিত্রী তাঁদের নিচে। সেখান থেকে কর্টেজকে তাঁরাই টেনে বের করে দুঃখ প্রকাশ করলেন। করলেন করমর্দন। এই একটি ঘটনাই বিশ্বব্যাপী সবার আগ্রহের কেন্দ্রে এখন এল সালভাদরের এই আলোকচিত্রী।

 

উৎসবরত ক্রোয়াট ফুটবলারদের নিচে পড়ে চোটটোট পেলেও ঘটনাটা বড়ই। মুহূর্তটি উপভোগই করেছেন তিনি, ‘আমি ৪০০ মিলিমিটার লেন্সের ক্যামেরা দিয়ে খেলা কভার করছিলাম, যা সাধারণত ফুটবল খেলায় ব্যবহার করা হয়। তারপর আমি দেখলাম গোল হয়েছে। আমি দেখলাম মানজুকিচ গোল উদ্‌যাপন করছে এবং আমার দিকে এগিয়ে আসছে। সে যখন আমার সামনে এল, আমি তার ছবি তুলতে শুরু করলাম। সেই মুহূর্তে আরও খেলোয়াড় চলে এল। তারপর আরও অনেকে। যখন সাইড বেঞ্চের খেলোয়াড়েরাও চলে এল, আমি পেছনে পড়ে গেলাম এবং তখন আমার ওপরে সবাই। ভাগ্য ভালো ছিল, আমি আমার ক্যামেরা হারাইনি।’


ক্রোয়েশিয়ার খেলোয়াড়েরা নাকি তাঁদের নিচে একজন আলোকচিত্রীকে দেখতে পেয়ে কিছুটা হকচকিয়েই গিয়েছিলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়েছে, সেই মুহূর্তে তারা বুঝতেই পারেনি তাদের পর্বতের নিচে একজন আলোকচিত্রী চাপা পড়েছে। তার যখন বুঝতে পারল আমি সেখানে আছি, তারা তখনই আমাকে উঠতে সাহায্য করে। জানতে চাইল আমি ঠিক আছি কি না! তারপর এক আবেগঘন পরিবেশ তৈরি হলো। খেলোয়াড়েরা আমাকে জড়িয়ে ধরল, করল করমর্দন।’


কর্টেজ এখন পুরোপুরি ক্রোয়েশিয়ার সমর্থক। ওই একটি ঘটনাই দারুণ একটা বন্ধন তৈরি করেছে বলে ধারণা তাঁর, ‘আমি ফাইনালে চাইব ক্রোয়েশিয়া জিতুক। অদ্ভুত একটা বন্ধন তৈরি হয়েছে তাদের সঙ্গে আমার।’

 

সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো

ছবিঃ সংগৃহীত

বিঃদ্রঃ দেশের ফটোগ্রাফারদের ছবি পুরস্কৃত এবং এ সম্পর্কিত খবর বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত হলে আমরা গর্ববোধ করি। বিভিন্ন মাধ্যম থেকে মূল্যবান এ তথ্যসমূহ সংগ্রহ করে আমরা সবাইকে জানাতে চেস্টা করি। তবে প্রকাশিত কনটেন্ট সম্পর্কে স্বত্বাধিকারীর আপত্তি সাপেক্ষে অভিযোগকৃত কনটেন্টসমূহ Amarpix.com সাইট থেকে সরিয়ে নেয়া হবে।