ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের প্রচ্ছদে বাংলাদেশী আসাদের ছবি

ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের প্রচ্ছদে বাংলাদেশী আসাদের ছবি

পেশাদার আলোকচিত্রী হিসেবে ছবিবিষয়ক ই-মেইল তিনি নিয়মিতই পান। তবে মে মাসে পাওয়া সেই ই-মেইলটি আলোকচিত্রী কে এম আসাদকে বেশ রোমাঞ্চিত করল, যা পাঠিয়েছেন ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সাময়িকীর আলোকচিত্র বিভাগের এক কর্মী। অন্য রকম এক ভালো লাগা নিয়ে তিনি মুঠোফোনের পর্দায় চোখ রাখলেন, দ্বিতীয়বার পাঠ করলেন তা।

 

২২ জুলাই প্রথম আলো কার্যালয়ে বসে মাস দুই আগের সেই মুহূর্তের মতোই মেইলের সারমর্ম শোনালেন আমাদের, ‘আমার তোলা একটি ছবি তাঁরা তাঁদের আগস্ট সংখ্যায় ব্যবহার করতে চান। সেই ছবি ব্যবহারের অনুমতির প্রসঙ্গ আর কিছু তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের জন্যই মেইলটি করেছিলেন।’

 

মুখভরা খোঁচা খোঁচা দাড়ি। হালকা–পাতলা গড়নের ছোটখাটো মানুষ কে এম আসাদ। ছোট কাঁধব্যাগটা ডান কাঁধে রেখেই আলাপ শুরু করেছিলেন। মেইলের কথা বলতে গিয়ে রোমাঞ্চে ভাসছিলেন, ‘তখন ভাবছিলাম, এও সম্ভব! আমার ছবি তারা চাইল। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন দৈনিক ও সাময়িকীতে আমার ছবি প্রকাশিত হয়েছে। তবে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক–এ ছবি ছাপা হওয়ার ব্যাপারটা স্বপ্নের মতো।’

 

তড়িঘড়ি করে মেইলের উত্তর দেন আসাদ। জানিয়ে দিলেন, ছবির ব্যাপারে যে যে তথ্য প্রয়োজন, তিনি জানানোর জন্য প্রস্তুত।

 

ফের ই-মেইল। আসাদ বুঝলেন ছবিটির সত্যতা নিশ্চিত করতে তাঁরা কিছুটা অনুসন্ধান করছেন। অনুসন্ধান বলতে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক ছবি প্রকাশের ক্ষেত্রে কিছু বিষয় কঠোরভাবে বিবেচনা করে। এর মধ্যে ছবিটি যান্ত্রিক উপায়ে তৈরি কি না, বাস্তব হলে কতটুকু সত্যতা আছে, ছবির মডেল যাকে করা হয়েছে, সেই মানুষের সম্মতি আছে কি না—এমন আরও অনেক বিষয়।

 

যে আলোকচিত্রটি নির্বাচিত হয়েছে, সেই সিরিজের সব ছবি আসাদ পাঠালেন। ছবিটি যে তাঁর নিজের এবং এতে কোনো যান্ত্রিক ব্যবহার হয়নি, সেটা নিশ্চিত হলো ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক। কিন্তু মডেল বা ছবির ব্যক্তির সম্মতি? বিশাল এক পরীক্ষার সম্মুখীন হলেন যেন আসাদ।

 

‘আমি তখন অনেক ভেবে তাঁদের বললাম, ছবিটি ২০১৭ সালে তোলা। রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের লাখ লাখ মানুষ মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে সে সময়। এমন সংকটময় মুহূর্তে কোনো মানুষকে কি স্বাক্ষরের কথা বলা সম্ভব?’ পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে সেই পরীক্ষাতেও উতরালেন। ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক–এর আলোকচিত্র বিভাগ আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে আসাদকে নিশ্চিত করল, ‘তোমার ছবিটি আমরা ব্যবহার করছি।’তবে আসাদ তখন জানতেন না, তাঁর ছবিটিই প্রচ্ছদে ব্যবহার করা হবে।  বিশ্বজুড়ে মর্যাদাপূর্ণ ও জনপ্রিয় সাময়িকীতে ছবি ছাপা হচ্ছে, তাতেই খুশি তিনি। ‘এ কারণে ছবির জন্য কোনো সম্মানী দেবে কি না, সে বিষয়েও কথা বলিনি,’ বলেন আসাদ।

 

সেই ছবিই এখন ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক–এর আগস্ট সংখ্যার প্রচ্ছদ, ১৩১ বছরের সাময়িকীর যে প্রচ্ছদ ভাবাবে লাখো পাঠককে। বাংলাদেশি কোনো আলোকচিত্রী হিসেবে তাঁর তোলা ছবিই প্রথম জায়গা পেল নামকরা এই সাময়িকীর প্রচ্ছদে।

 

আর সম্মানী ?

আসাদ বলেন, যখন নিশ্চিত করা হলো প্রচ্ছদেই যাচ্ছে ছবিটি, তখনই ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সম্মানী পাঠানোর জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য চেয়েছিল। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে যখন সম্মানীর অর্থ জমা হলো, সেটাও এক অর্থে অবাক করেছিল।

 

করবে নাই–বা কেন! সেই অঙ্কটাও যে কম নয়—সাড়ে চার হাজার ডলার, বাংলাদেশি টাকায় যা প্রায় ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা। তবে আসাদের কাছে অর্থ নয়, ছবি প্রকাশিত হচ্ছে—এই সম্মানটুকুই বড়।

 

আসাদের তোলা এই ছবিটিই ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক–এর প্রচ্ছদে ব্যবহার করা হয়েছে

আসাদের তোলা এই ছবিটিই ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক–এর প্রচ্ছদে ব্যবহার করা হয়েছে

 

বিষয় যখন বাস্তুচ্যুত মানুষ

ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক–এর চিরচেনা উজ্জ্বল হলুদ রঙের আয়তাকার বর্ডারের মধ্যে আসাদের ছবিটির দিকে তাকালে দেখা যায়—পানি ভেঙে হেঁটে যাচ্ছেন এক নারী। তাঁর কোলে ছোট শিশু, চোখে–মুখে আতঙ্কের কালো ছায়া, যেন অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মেঘ। তাতেই জীবন্ত হয়ে ধরা দিয়েছে আপন আবাস ছেড়ে অনিশ্চিত পথে পা ফেলার করুণ কাহিনি।

 

ছবিটি দেখে অনেকে ভেবে বসতে পারেন, সাময়িকীর আগস্ট সংস্করণের বিষয়বস্তু কি তবে রোহিঙ্গা সমস্যা?

 

—না।

ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক তাদের স্বীকৃত (ভেরিফায়েড) ফেসবুক পেজে আগস্ট সংখ্যার প্রচ্ছদ প্রকাশ করেছে ১৬ জুলাই। ‘ওয়ার্ল্ড অন দ্য মুভ’ শিরোনামে সেই প্রচ্ছদের ছবির সঙ্গে লিখেছে, ২০১৭ সালের শেষ নাগাদ যে বিশালসংখ্যক মানুষ বলপূর্বক বা বাধ্যতামূলক বাস্তুচ্যুত হয়েছে, তা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ থেকে অন্যান্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। তাই এই (আগস্ট) মাসে সাময়িকীটি দৃষ্টিপাত করেছে সেই অভিবাসন এবং তার পেছনের কারণগুলোর ওপর। বাস্তুচ্যুত হওয়ার নেপথ্যে যেমন রয়েছে যুদ্ধ-বিগ্রহ, তেমনি আছে জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানাবিধ বিষয়। বাধ্যতামূলক অভিবাসনকে ভিন্ন আঙ্গিকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে সাময়িকীর আগস্ট সংস্করণে।

 

বৈশ্বিক সেই বিষয়টির প্রতীকী উপস্থাপনই আসাদের ছবিটি?

 

প্রশ্নটা রাখা হয়েছিল ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক–এর জ্যেষ্ঠ আলোকচিত্র সম্পাদক স্যাদি ক্যুরিয়রকে। তিনি নিজেই উদ্যোগী হয়ে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক-এর প্রধান সম্পাদক (এডিটর–ইন–চিফ) এবং ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক পার্টনারসের সম্পাদকীয় পরিচালক সুসান গোল্ডবার্গের বক্তব্য জোগাড় করে দিলেন। আলোকচিত্র সম্পর্কে গোল্ডবার্গের মত, ‘জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, প্রায় ১০০ কোটি মানুষ ঘরছাড়া; যে মানুষগুলো ঘরছাড়া হয়েছে বাধ্য হয়ে কিংবা সুন্দর জীবনের সন্ধানে। সত্যি বলতে কি, সংখ্যাটা ভয়াবহ। মর্মস্পর্শী ছবিটি বাস্তুচ্যুত মানুষের বিশাল সংখ্যাটাকে দুইয়ে নামিয়ে এনেছে এবং তাৎক্ষণিকভাবে ভয়াবহতার গল্পটাও বলে।’

 

মানুষ আসছিল ‘বানের লাহান’

২০১৭ সালে মিয়ানমারে নির্যাতিত রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আসছিল বন্যার স্রোতের মতো। কবির ভাষায়, ‘বানের লাহান’। সেই কথা অনেকের জানা। সে সময় অনেক আলোকচিত্রীর মতো আসাদও ছিলেন কক্সবাজারের টেকনাফে। কয়েক দিন টেকনাফে কাজ করার পর আসাদ খবর পান, সাগর পাড়ি দিয়ে শাহপরীর দ্বীপ হয়ে বাংলাদেশে আসছে রোহিঙ্গারা। কিন্তু ঠিক দ্বীপের কোন পথে আসে, কিংবা আদৌ আসবে কি না, তা নিয়ে সংশয় ছিল। তবু অন্যান্য ফটোসাংবাদিকের সঙ্গে আসাদও যান শাহপরীর দ্বীপে।

 

আসাদ বলেন, ‘দিনভর অপেক্ষার পর ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম সবাই। ঠিক তখনই দৃষ্টির শেষ সীমায় একটা বিন্দুর মতো কিছু দেখতে পাই। খানিকক্ষণ অপেক্ষার পর আমরা নিশ্চিত হই যে সেটা একটা নৌযান।’ সেই নৌযান তীরে এসে ভিড়ল রোহিঙ্গাদের নিয়ে। আলোকচিত্রীরা ছবি তুলতে শুরু করলেন। আসাদও তুলছেন। ঠিক সে সময়েই তাঁর মনে হলো, ফ্রেমের বাইরে কিছু একটা চলে গেল। তিনি ক্যামেরা ঘুরিয়ে দেখেন এক রোহিঙ্গা নারীকে, যিনি সমুদ্রের ঢেউয়ের তোড় থেকে শিশু সন্তানকে বাঁচাতে তীরের দিকে দৌড়ে যাচ্ছেন। চকিতেই সে শিশুর মুখ দেখলেন আসাদ। শিশুর মুখে যন্ত্রণার ছাপ। আসাদ বলে যান ছবি তোলার মুহূর্তের কথা, ‘শিশুটির মুখের দিকে তাকিয়েই বলে দেওয়া সম্ভব—কী হয়েছিল ওপারে। সে সময় আমার মনে হয়েছিল, অন্য কিছু না, সেই মুখাবয়ব, সেই অভিব্যক্তি আমাকে ধারণ করতে হবে।’

 

কে এম আসাদ। ছবি: দীপু মালাকার

কে এম আসাদ। ছবি: কবির হোসেন

 

একজন আসাদ-

পেশাদার আলোকচিত্রী হিসেবে তাঁর হাতেখড়ি স্নাতক পড়ার সময়। উচ্চমাধ্যমিকে পড়ার সময়ই আলোকচিত্রী হওয়ার সিদ্ধান্ত পাকাপোক্ত করে ফেলেছিলেন। রাজধানীর একটি কলেজে ব্যবস্থাপনা বিষয়ে স্নাতক প্রথম বর্ষে ভর্তির পর পাঠশালা সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনস্টিটিউটেও ভর্তি হন। আলোকচিত্র শিক্ষার এই প্রতিষ্ঠান থেকেই স্নাতক হন আসাদ। এখন মুক্ত পেশাজীবী হিসেবে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও প্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করেন।

 

তাঁর আলোকচিত্র পেয়েছে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নানা পুরস্কার। যে ছবিতে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক–এর প্রচ্ছদ রাঙালেন আসাদ, সেই ছবির জন্যই দ্বিতীয় পুরস্কার অর্জন করেন ‘ইউনিসেফ ফটো অব দ্য ইয়ার-২০১৭’ প্রতিযোগিতায়। এ ছাড়া ‘হিপা মোমেন্ট’ আলোকচিত্র প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করলেন ২০১৮ সালে। আরব আমিরাতের দুবাইভিত্তিক এই হিপা বা হামদান ইন্টারন্যাশনাল ফটোগ্রাফি অ্যাওয়ার্ড ফটোগ্রাফি দুনিয়ায় সম্মানজনক পুরস্কার হিসেবে স্বীকৃত।

 

এমন স্বীকৃতি আর সম্মাননার জন্যই বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে ছুটির দিনের উদীয়মান তরুণ সংখ্যায় জায়গা পেয়েছিলেন কে এম আসাদ। ২০১৮ সালে প্রকাশিত সেই সংখ্যায় তাঁকে নিয়ে লিখেছিলেন আলোকচিত্রী এবং পাঠশালা সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ আবীর আবদুল্লাহ। লেখাটির শিরোনাম ছিল—অসীমের পানে আসাদ।

 

শিরোনামটা আসাদকে মনে করিয়ে দিতেই তিনি হাসলেন। সেই হাসিতে মিশে থাকল সীমাহীন সাহস নিয়েই এগিয়ে চলার দৃপ্ত প্রত্যয়। অনেকের কাছে যা অজেয়, তা-ই যে জয় করার আকাঙ্ক্ষা আসাদের!

 


অভিনন্দন আসাদ
আবীর আবদুল্লাহ

ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক–এর মতো বিশ্বখ্যাত সাময়িকীর প্রচ্ছদ-ছবি তোলা, এ তো যেকোনো আলোকচিত্রীর জন্যই সম্মানজনক ব্যাপার। তবে আসাদ নিজেকে বেশি সম্মানিত ভাবতে পারেন, কারণ ছবিটি তাঁকে অ্যাসাইনমেন্ট দিয়ে তোলানো হয়নি, ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক চেয়ে নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি মূলত কোনো বিষয়ের ওপর কাজ করতে গিয়ে তাদের আলোকচিত্রীদের অ্যাসাইনমেন্ট দিয়েই ছবি তুলিয়ে থাকে। শুধু এই বিষয়টিই নয়, প্রচ্ছদ ছবিটি সারা পৃথিবীর অসংখ্য বাস্তুচ্যুত মানুষের প্রতিনিধিত্ব করছে। এটা যেমন বাংলাদেশি আলোকচিত্রী হিসেবে আসাদের সম্মানের, তেমনি যেকোনো আলোকচিত্রীর জন্যই সম্মানজনক ব্যাপার। আমার জানামতে, বাংলাদেশি কোনো আলোকচিত্রীর তোলা ছবি এই প্রথম প্রচ্ছদে ব্যবহার করল ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক

 

এই ছবি তোলার মুহূর্তের সঙ্গে আমারও স্মৃতি রয়েছে। সেদিন কক্সবাজারের টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপে যে কজন আলোকচিত্রী ছিলেন, তাঁদের সঙ্গে আমিও উপস্থিত ছিলাম। রোহিঙ্গাদের নিয়ে নৌকাটা যখন তীরে ভিড়ল, মোটে ২-৩ মিনিট সময় পাওয়া গিয়েছিল। এর মধ্যে ছবিগুলো তুলতে হয়েছে। একেকজন আলোকচিত্রীর দেখার চোখ ভিন্ন। ভিন্নতা বলেই আসাদ এই ছবিটি তাঁর ক্যামেরার লেন্সে ধরতে পেরেছেন।

 

আসাদ আমার সরাসরি ছাত্র। তাঁর আলোকচিত্রী হয়ে ওঠা আমি কাছ থেকে দেখেছি। কাজের প্রতি একাগ্রতা আর কঠোর পরিশ্রমী মানসিকতা তাঁর বড় সম্বল। সেই সম্বলই তাঁকে সফলতার পথে এগিয়ে নিয়েছে। এখন সেই চেনা পথ ধরেই হাঁটছেন কে এম আসাদ। অভিনন্দন তাঁকে।

 

লেখক: আলোকচিত্রী এবং পাঠশালা সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ।

 

১৩১ বছরের প্রকাশনা -


কয়েকজন অনুসন্ধিৎসু শিক্ষকের উদ্যোগ আর সম্পদশালী মানুষের পৃষ্ঠপোষকতায় ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সোসাইটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত অলাভজনক এই সোসাইটির উদ্দেশ্যই ছিল বিজ্ঞান ও শিক্ষামূলক গবেষণা করা। ১৮৮৮ সালের জানুয়ারি মাসে যাত্রার পর থেকে প্রতিষ্ঠানটি আজ অবধি সে কাজই করে যাচ্ছে। ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সোসাইটির উদ্যোগেই ১৮৮৮ সালের ২২ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত হয় ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সাময়িকীর প্রথম সংখ্যা। তখন থেকে আরও অনেকটা সময় পর্যন্ত মাসিক এই সাময়িকী অবশ্য ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক ম্যাগাজিন নামেপ্রকাশিত হয়েছে। পরবর্তী সময়ে মূল নাম থেকে ‘ম্যাগাজিন’ শব্দটি বাদ দেওয়া হয়। বর্তমানে দৃষ্টিনন্দন ছবির জন্য সুপরিচিত সাময়িকীর প্রথম সংখ্যায় কোনো ছবিই ব্যবহার করা হয়নি। শুধু প্রথম সংখ্যার কথাই বলছি কেন, ১৯০৫ সাল পর্যন্ত এই সাময়িকী ছিল মূলত ভূবিজ্ঞান–বিষয়ক লেখাসংবলিত বৈজ্ঞানিক জার্নাল। সে বছরই তিব্বতের ওপর একটি নিবন্ধের সঙ্গে প্রথমবারের মতো ছবি ব্যবহার করা হয়েছিল। ১৩১ বছরের এই সাময়িকী বর্তমানে বিশ্বের ৪১টি ভাষায় প্রকাশিত হয়। পাঠকসংখ্যা সারা বিশ্বে ৬০ লাখেরও বেশি। বর্তমানে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সোসাইটির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বহুজাতিক গণমাধ্যম সংস্থা দ্য ওয়াল্ট ডিজনি কোম্পানি সাময়িকীর ৭৭ শতাংশের অংশীদার।

 

 

 

 

সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো

বিঃদ্রঃ দেশের ফটোগ্রাফারদের ছবি পুরস্কৃত এবং এ সম্পর্কিত খবর বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত হলে আমরা গর্ববোধ করি। বিভিন্ন মাধ্যম থেকে মূল্যবান এ তথ্যসমূহ সংগ্রহ করে আমরা সবাইকে জানাতে চেস্টা করি। তবে প্রকাশিত কনটেন্ট সম্পর্কে স্বত্বাধিকারীর আপত্তি সাপেক্ষে অভিযোগকৃত কনটেন্টসমূহ Amarpix.com সাইট থেকে সরিয়ে নেয়া হবে।