নিখিল চন্দ্র দাস বাঁচিয়ে রেখেছেন বাংলার ৪০০ বছরের প্রাচীন পটচিত্র।
পট কথাটির অর্থ কাপড়। সংস্কৃত পট্ট (কাপড়) শব্দ থেকে পট শব্দের উৎপত্তি। এই পটে আঁকা চিত্রই পটচিত্র। এ চিত্র যারা আঁকেন তাদের বলা হয় পটুয়া। পটচিত্র শুরু হয় বুদ্ধদেবের সময় খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ থেকে পঞ্চম শতকে।
ছবি- যামিনী রায়
পটশিল্পীরা নিজেরাই রং তৈরি করে নেন। রং তৈরি করা হয় পাতার রস, কালি, কাঠ-কয়লা, সিদুঁর বা আলতা, ইটের গুড়া ইত্যাদি দিয়ে। আর রঙের স্থায়িত্ব করা হয় বেলের আঠা, তেঁতুলের ও বাবলার আঠা দিয়ে। বাশের কাঠির মাথায় তুলা জড়িয়ে বানানো হয় তুলি। এর পরেই রং-তুলিতে বলা হয় বাংলার ঐতিহ্য বা পৌরাণিক গল্প।
ছবি- যামিনী রায়
বাংলার লোক-চিত্রকলার এক অনন্য ধারা পটচিত্র। বিলুপ্তির পথ ধরেছিল এই পেশা ও শিল্পকর্ম। তবে কয়েক বছরে একটু একটু করে ঘুরে দাড়িয়েছে এটি। যার হাত ধরে নতুন প্রজন্মের তুলিতে আবার ফিরছে পটচিত্র ও পটগান তথা পটশিল্প, তিনি হলে দেশবরেণ্য পটচিত্রশিল্পী নিখিল চন্দ্র দাস। তিনিই আজকের পটুয়া নিখিল চন্দ্র দাস। বাঁচিয়ে রেখেছেন বাংলার ৪০০ বছরের প্রাচীন পটচিত্র।
১৯৬১ সালে নড়াইলের কালিয়া উপজেলার মাউলি গ্রামে নিখিল চন্দ্র দাসের জন্ম। বংশপরম্পরায় ছিল শিল্পের অনুকূল পরিবেশ। মা-বাবা দুজনেই ছবি আঁকতেন। তিনি বিশ্ববরেণ্য শিল্পী এস এম সুলতানের সান্নিধ্যেও ছিলেন। ২০ কিলোমিটার হেটে প্রতিদিন সুলতানের সঙ্গে দেখা করতে আসতেন।
পটশিল্পকে নতুন প্রজন্মের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে দেশের আনাচকানাচে নিরন্তর ছুটে চলেছেন নিখিল চন্দ্র।
এস এম সুলতানের স্মরণে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) চারুকলা বিভাগে এস এম সুলতান রিসার্চ সেন্টারের আয়োজনে চলছে তিন দিনব্যাপী পটচিত্র কর্মশালা-২০১৯। কর্মশালার প্রশিক্ষক নিখিল চন্দ্র দাস। কর্মশালায় রবীন্দ্রভারতী, ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর, জগন্নাথ, চট্টগ্রাম, খুলনা, ইউডা বিশ্ববিদ্যালয়সহ স্কুল ও কলেজের প্রায় ৭৫ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন।
সূত্রঃ দৈনিক কালের কন্ঠ
ছবিঃ সংগৃহীত
মন্তব্য (0)
ফেসবুক মন্তব্য (0)